Monday 26 March 2018

Literature / Literature written before the development of language

   সাহিত্য


“সাহিত্য” শব্দের  মধ্যে রয়েছে “সহিত” কথাটি । “সহিত” শব্দটি থেকে সাহিত্যের উৎপত্তি। অর্থাৎ ধাতুগত অর্থ ধরলে সাহিত্য শব্দের মধ্যে একটি মিলনের ভাব দেখতে পাওয়া যায়, সে যে কেবল ভাবে-ভাবে, ভাষায়-ভাষায়, গ্রন্থে-গ্রন্থে মিলন তা নয়, -“ মানুষের সহিত মানুষের, অতীতের সহিত বর্তমানে, দূরের সহিত নিকটে, অত্যন্ত অন্তরঙ্গ যোগসাধন। সাহিত্য ব্যাতিত আর কিছু তারই সম্ভব নহে”। বস্তুত; “বহিঃপ্রকৃতি এবং মানবচরিত্র মানুষের হৃদয়ের মধ্যে অনুক্ষণ যে আকার ধারন করিতেছে, যে সংগীত ধ্বনিত করিয়া তুলিতেছে, ভাষায় রচিত সেই চিত্র এবং সেই গানই সাহিত্য”।। ( সাহিত্যের তাৎপর্য ) সুতারাং , “নিজের কথা, অপরের কথা, বিশ্বজগতের কথা, সাহিত্যিকের মনোবীনায় যে সুরের ঝংকার তোলে তাঁর শিল্পসম্মত প্রকাশের নাম সাহিত্য”।।

* নিজের কথা বলতে কবি নিজের ব্যক্তিগত অনুভূতি ভালোলাগা ও ভালোবাসা।।

* অপরের কথা বলতে কবির নিজের কথা নয়, অপরের কথায় পরিবেশিত করেছে  তার জারক রসে জারিত করে।।

* বিশ্বজগতের কথা বলতে কবি এখানে বাইরের ভূখণ্ডের আশেপাশের অবস্থার কথা বলেছে।।

* সাহিত্যর মনোবীনায় যে সুরের ঝংকার তোলে বলতে কোনো বিষয় সাহিত্যিকের অন্তরের অনুভূতি স্পর্শ পেয়ে যে রস রূপ নির্মাণ করে তোলে তারই কথা।

                           

সাহিত্যের কাজ

‘সাহিত্যের বিচারক’  প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন,- “অন্তরের জিনিসকে বাহিরের ভাবের জিনিসকে ভাষায়, নিজের জিনিসকে বিশ্বমানবের এবং ক্ষণকালের জিনিসকে চিরকালের করিয়া তোলা সাহিত্যের কাজ”। 



সাহিত্যর প্রকাশ

সাহিত্য জিনিসটাই শিল্পসম্মত একটা ব্যাপার। মনের ভাবকে সাহিত্যিকরা বিচিত্র বর্ণের , বিচিত্র রূপের, বিচিত্র ছন্দে প্রকাশ করে থাকেন। এক্ষেত্রে এ প্রসঙ্গে আসে প্রকাশের বাহন সেটা হল অর্থ যুক্ত শব্দ। সাহিত্যের যে শব্দ গুলো হওয়া প্রয়োজন তা হল অলংকার। এবং তার অর্থ যুক্ত শব্দে থাকবে ব্যাঞ্জনা । তবেই এটাই হল সাহিত্য।



ভাষা বিকাশের আগে রচিত সাহিত্যঃ-

নির্দিষ্ট সময়কাল ধরে সাহিত্য আলোচনা করা খুবই কঠিন ব্যাপার। মোটামুটি একটা কাল, রচনার পেরিপ্রেক্ষিত , কবি কিংবা লেখকের দেওয়া সময়ের ইঙ্গিত, প্রভৃতি ধরে নিয়ে সাহিত্যকে বিচার করা হয়। তবে আলোচনার সুবিদার্থে আমরা ভাষা বিকাশের আগে রচিত সাহিত্য কে নিয়ে আলোচনা করতে পারি।

১) খ্রীষ্টিয় সপ্তম শতাব্দী থেকে ভাষার জন্ম হয়।( আনুমানিক )

২) খ্রীষ্টিয় ২০০ অব্দ থেকে ৭০০ অব্দের মধ্যে মাগধী অপ্রভ্রংশ অবহট্টের মধ্য দিয়ে সরলীকৃত হতে হতে বাংলা ভাষার জন্ম হয়।

৩) সপ্তম শতকে রচিত হল বাণভট্টের হর্ষচরিত।

8) খ্রীষ্টিয় ৮০০ থেকে ১০০০অব্দের মধ্যে রচিত সাহিত্য একমাত্র পুথি আমাদের হাতে এসেছে। যার নাম চর্যাপদ।

৫) আলোচনার সুবিদার্থে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসকে – আদিযুগ,মধ্যযুগ এবং আধুনিক যুগ এই তিনটি যুগে ভাগ করা হয়েছে।




যুগবিভাগঃ-




ক) আদিযুগঃ-

৯৫০ খ্রীঃ – ১২০০ খ্রীঃ । প্রাচীন বা আদিযুগ টা ছিল বৌদ্ধ ও হিন্দু রাজত্বের রাজত্ব । এই যুগ ছিল সাহিত্যের ক্ষেত্রে উর্ন্মেষ পর্ব। তুর্কি বিজয়ের আগে পর্যন্ত এই পর্ব বিস্তার ছিল। জানা দরকার দ্বাদশ থেকে চতুর্দশ শতক পর্যন্ত সময়কালকে বাংলা সাহিত্যের সুষুপ্তির কাল হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কারন, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উপযুক্ত অঙ্কুরোদ্গমের সময় এটা ছিল।




খ) মধ্যযুগ:-

চতুর্দশ থেকে ষোড়শ শতক পর্যন্ত বিস্তারিত। তুর্কী বিজয়ের থেকে ইংরেজ বিজয়ের পূর্ব পর্যন্ত। এই যুগকে আবার চার ভাগে ভাগ করা হয়।  (১)অন্ধকার পর্ব, (২) প্রতিষ্ঠা পর্ব (৩) ঐশ্বর্য পর্ব (৪) অবক্ষয় পর্ব।



গ) আধুনিক যুগ:-

আধুনিক যুগের সাহিত্য নানা বহুমুখী বৈশিষ্ট্যের সমুজ্জ্বল। তাদের মধ্যে দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হল;- ছাপার হরফে সাহিত্যের প্রকাশ।এবং বাংলা গদ্যের ব্যবহার। ইউরোপীয়রা অর্থাৎ বিশেষত পাদ্রীরা (উইলিয়াম কেরির) নেতৃত্বে একদল সাহিত্যিকের আর্বিভাব হয়েছিল । তারাই সর্বপ্রথম ভাঙা গদ্যে সাহিত্য রচনায় প্ৰবৃত্ত হন।  

No comments:

Post a Comment

Popular